Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

সুমেরীয় ও মিশরীয় পৌরাণিক কাহিনি বা মিথ -এর পরিচয় দাও।

সুমেরীয় ও মিশরীয় পৌরাণিক কাহিনি বা মিথ

সুমের ও মিশর — এই দুই দেশের অধিকাংশ পৌরাণিক কাহিনি খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় অব্দের পরে শুরু হয়।

সুমেরীয় পৌরাণিক কাহিনি বা মিথ

সৃষ্টি তত্ত্ব

একসময় জলমগ্ন পৃথিবীতে মাটিকে আলাদা করা নিয়ে দেবতা ও এক অসুর প্রধানের মধ্যে যুদ্ধ হয়। দেবতাদের প্রধান অসুরকে মেরে তার দেহের ওপরের অংশ দিয়ে আকাশ ও নিম্নাংশ দিয়ে বাসভূমি তৈরি করেন। এ ছাড়াও তিনি প্রথম যুগের মানুষের প্রতিকৃতি নির্মাণ করেন।

মহাপ্লাবন তত্ব

একসময় দেবতারা পৃথিবীকে প্লাবিত করে মানবজাতীকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু জলের দেবতা এই সিদ্ধান্তের কথা নলখাগড়া বনের কাছে ফাঁস করে দেন। নলখাগড়া বন থেকেই কিছু নলখাগড়া নিয়ে এক ব্যক্তি কুঁড়ে ঘর তৈরি করছিল। এখন নলখাগড়াগুলি ওই প্লাবনের কথা লােকটিকে বলেছিল। লােকটি এক বিরাট নৌকা তৈরি করল। নিজেদের রক্ষা করার জন্য লােকটি তার নিজের পরিবার পরিজনদের নিয়ে নৌকায় উঠল। নৌকাতে সে সঙ্গে নিল কিছু দক্ষ কারিগরদের এবং বিভিন্ন ধরনের পশু ও পাখিদের। এদিকে প্রবল বর্ষণে সারা পৃথিবী জলে ডুবে গেলেও শুধুমাত্র যারা নৌকায় আশ্রয় নিয়েছিল তারাই বেঁচে রইল। ছয়দিন পর ঝড়-বৃষ্টি থেমে গেলে জল সরে যেতে লাগল। নৌকা থেকে দাঁড়কাক উড়ে গিয়ে ডাঙার খোঁজ নিয়ে এল। নৌকার সকলে সেই ডাঙায় নেমে গিয়ে বসবাস শুরু করল।

দেবতাদের সৃষ্টি তত্ত্ব

ব্ৰত্মাণ্ড যখন সম্পূর্ণ সৃষ্টি হয়নি, তখন আনুনআনকি দেবতাদের সৃষ্টি হয়। পরে গবাদি পশুদের দেবী লাহার এবং শস্যের দেবী আসনানকে সৃষ্টি করা হল। আরও পরে এনকির পরামর্শে এনলিল দুই দেবীকে পাঠালেন পৃথিবীতে। দুই দেবী মর্ত্যে পশুপালন ও খাদ্যোৎপাদনে সহায়তা করলেন।

প্রাণী-সৃষ্টি তত্ত্ব

এনকি আফসু (গভীর জলের নীচের স্তর) থেকে উর্বর মাটি নিয়ে নামুকে মানুষ সৃষ্টিতে সাহায্য করে। এরপর নিন্ম ছয়জন প্রাণী সৃষ্টি করেন। এদিকে এনলিন পৃথিবীকে উদ্ভিদ ও প্রাণীসমূহের দ্বারা উর্বর করে তােলার জন্য এনমেস ও এনটেন নামে দুই ভাইকে সৃষ্টি করেন। এনটেনকে পশু ও উদ্ভিদ সৃষ্টির এবং এনমেসকে শহর সৃষ্টির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মিশরীয় পৌরাণিক কাহিনি বা মিথ

বিশ্বসৃষ্টির মতবাদ

বিশ্বসৃষ্টির সম্পর্কে প্রাচীন মিশরীয়দের ধারণা ছিল অদ্ভুত প্রকৃতির। তারা মনে করত আকাশের দেবী নাট, গাভির শরীর নিয়ে বিশ্বের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত ঢেকে রেখেছে। তাদের ধারণায় প্রথমে এই বিশ্বে ছিল শুধু জল আর জল আর চারদিকে অন্ধকার। একদিন এই জলরাশি ভেদ করে উঠে এল এই পাহাড়। সুবিশাল জলরাশির মাঝে ওই পাহাড়ের স্থলভূমি পরে রূপ পায় পৃথিবীতে।

স্বর্গীয় ধারণা

মিশরীয়দের ধারণায় আকাশের ওপরে থাকা স্বর্গের দুটি (পূর্ব ও পশ্চিম) বা চারটি অংশ চার দেবতার অধীন। স্বর্গে দেবতা, দেবদূতের সঙ্গে মানুষের আত্মাও থাকে।

মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের ধারণা

মিশরীয়রা মনে করত মানুষের মূল সত্তা (Soul) হল ‘বা (Ba) এবং প্রাণশক্তি (Spirit) হল ‘কা’ (Ka)। যেগুলির প্রতীক হল বাজপাখি এবং সারস পাখি। এরা মানুষের মৃত্যুর পর তাকে স্বর্গের সঙ্গে যােগাযােগ করিয়ে দেন। মৃত্যু পরবর্তী জীবন সম্পর্কে মিশরীয়দের অন্যমত হল মৃত্যুর পর আত্মা দেহের মধ্যেই অনন্তকাল ধরে বেঁচে থাকে। তাই মৃতদেহ সংরক্ষণ করলে ‘বা’ এবং ‘কা’ সেই মৃতদেহতে প্রবেশ করে ফলে মৃতদেহটি পুনরুজ্জীবিত হয়।

দেবশিশুদের জন্মকাহিনি

প্যাপিরাসের ওপর লিপিবদ্ধ কাহিনি অনুযায়ী মহান দেবতা ও হােলিওপােলিসের পুরােহিতদের স্ত্রীর গােপন মিলনে উসারকাফ, সাহুরা ও নেফেরকারা নামে তিন দেবশিশুর জন্ম হয়। দেবী মেসখে্ত দেবশিশুদের রাজপদে বসার বিশেষ ক্ষমতা দেন। এঁরাই হলেন পঞ্চম রাজবংশের তিন ফ্যারাও।

উপসংহার

সুমের ও মিশর — এই দুই দেশের প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ ও পুরাণ ভগ্নস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া লিপিগুলিতে মিথের পরিচয় মেলে।

Leave a reply