Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

বিশ্বের বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনিগুলির মধ্যে মূল কয়েকটি সাদৃশ্য লেখাে। পৌরাণিক কাহিনির গুরুত্ব আলােচনা করাে।

পৌরাণিক কাহিনিগুলির মধ্যেকার সাদৃশ্যসমূহ

বিশ্বসৃষ্টির রহস্য

ব্যাবিলন ও সুমের

সুমেরীয় সৃষ্টিতত্ত্ব, এনুমা এলিশ থেকে জানা যায় ব্যাবিলনের দেবতা ছিলেন মার্দুক। এই মার্দুক তৈরি করেন স্বর্গ ও মর্ত্য।

মিশর

মিশরের পৌরাণিক ধারণা অনুযায়ী সৃষ্টির আদি পর্বে বিশ্বব্ৰত্মাণ্ড ছিল কালাে জলে পূর্ণ। এই জল থেকেই আবির্ভূত হন আদি দেবতা রে-আতুম। তিনি থুতু ছেটালে, তা থেকে জন্ম নেন শু (বাতাসের দেবতা) এবং তেফনাত (বাষ্পের দেবতা)। শু এবং তেফনাত জন্ম দেন দুই সন্তানের, এরা হলেন—নুত (আকাশ) এবং গেব (মর্ত) এদের জন্মের পরেই সৃষ্টি হয় পৃথিবীর।

চিন

চিন দেশের পুরাণ কথা থেকে জানা যায়, আদিতে এই বিশ্বব্ৰত্মাণ্ড ছিল একটা প্রকাণ্ড ডিম, যার ভিতরে ছিল কেবল সীমাহীন শূন্যতা। সেই ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে বামনাকৃতির প্রথম জীব পাকু। তার দেহ থেকে তৈরি হয় গাছপালা, মাটি, নদনদী, বাতাস।

ভারত

হিন্দুদের প্রধান তিন দেবতা ব্রহ্মা হলেন সৃষ্টির দেবতা, বিষ্ণু স্থিতির দেবতা আর মহেশ্বর বা শিব হলেন প্রলয়ের দেবতা। হিন্দু ধারণা অনুযায়ী প্রতি হাজার বছরের মহাযুগের শেষে শিব আগুন ও বন্যার দ্বারা পৃথিবী ধ্বংস করেন। তিনি একটি সােনার ডিমের ভেতর সচল জীবনের বীজ সঞ্চিত রাখেন। সেই ডিম ভেঙেই ভগবান ব্রহ়া নতুন পৃথিবীর সৃষ্টি করেন।

মানবসৃষ্টি তত্ব

ব্যাবিলন

ব্যাবিলনের দুই দেবতা ছিলেন কিংগু ও মার্দুক। কিংগু তার রক্ত দিয়ে তৈরি করলেন মানুষ। আর মার্দুক সেই মানুষকে দিয়ে ব্যাবিলনে মন্দির তৈরি করালেন।

মিশর

প্রাচীন মিশরীয় দেবতা রে আতুমের (আদিদেবতা) আনন্দাশু থেকে জন্ম নেয় মানুষ।

গ্রিক ও রোম

গ্রিক ও রােমান পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী বারাে জন অমর বীর টাইটানদের অন্যতম প্রমিথিউস মাটি আর জল দিয়ে প্রথম মানুষ তৈরি করেন।

আমেরিকা

আমেরিকার আদিম নাভাজো উপজাতির মানুষেরা বিশ্বাস করত চারজন দেবতা মিলে বাতাসকে দুটি শস্যের শিষে প্রাণ সঞ্চার করতে বলেন। এই শিষ থেকেই সৃষ্টি হয় প্রথম মানব আর মানবীর।

মহাপ্লাবন

মেসােপটেমীয় পুরাণ

মেসােপটেমীয় পুরাণ কথা অনুযায়ী, দেবতারা পৃথিবীকে প্লাবিত করে দুষ্ট মনুষ্যজাতিকে ধ্বংস করার উদ্যোগ নেন। দেবতাদের এই সিদ্ধান্ত জলের দেবতা নলখাগড়া বনের কাছে ফাঁস করে দেন। নলখাগড়া দিয়ে কুঁড়ে তৈরি করা এক ব্যক্তি এই কথা নলখাগড়াগুলাের কাছ থেকে জানতে পেরে এক বিরাট নৌকা তৈরি করে নিজের পরিবার পরিজনকে নিয়ে তাতে বাস করতে লাগলেন। নিদিষ্ট দিনে মহাপ্লাবনে সারা পৃথিবী জলে ডুবে গেলেও কেবলমাত্র যারা ওই নৌকায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তারাই বেঁচে রইলেন।

ওল্ড টেস্টামেন্ট

ওল্ড টেস্টামেন্ট অনুযায়ী অত্যধিক বৃষ্টিতে পৃথিবীতে জলপ্লাবন দেখা দিলে ধার্মিক ও সিদ্ধপুরুষ নােয়া ঈশ্বরের উপদেশমতাে সুদীর্ঘ জাহাজ নির্মাণ করেন। সেই জাহাজে উঠে নােয়ার আত্মীয়রা বেঁচে যান, আর ভ্রষ্ট দুরাত্মারা মারা যায়।

ভারতীয় পুরাণ

মহাভারত, মৎস্যপুরাণ ও শতপথ ব্রাহ্মণ অনুযায়ী মহাপ্লাবনের সময় যাবতীয় জীবের প্রাণ রক্ষার জন্য ব্রহ্মা মনুকে একটি নৌকা দিয়ে রক্ষা করেছিলেন। মহাপ্লাবনের শেষে মনু প্রজা সৃষ্টি করলেন। মনুর সৃষ্ট বলে মানুষের নাম মানব।

পৌরাণিক কাহিনিগুলির গুরুত্ব

ঈশ্বর ভাবনায়

পৌরাণিক কাহিনিগুলি আপাতভাবে কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন বলে মনে হলেও পাঠকমনে তা ঐশ্বরিক বিশ্বাসের জন্ম দেয়।

বিজ্ঞান-পূর্ব যুগের ঘটনার অনুসন্ধানে

অতীতে পরিবেশের চারদিকে, আকাশে, মাটিতে যে সমস্ত প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটেছে তার উত্তর খোঁজার তাগিদেই প্রথম সৃষ্টি বিষয়ক পৌরাণিক কাহিনিগুলি গড়ে ওঠে।

ঐতিহাসিক উপাদানের সূত্র হিসেবে

পৌরাণিক কাহিনিগুলিতে অনেকসময় প্রচ্ছন্নভাবে ঐতিহাসিক উপাদানের সূত্র মিলতে পারে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে গ্রিসের পৌরাণিক কাহিনির সূত্র ধরেই আধুনিক গ্রিসে ট্রয় নগরী ও ট্রয়ের যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থান জানা গেছে।

Leave a reply