Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর আমলে ভারতে রেলপথ প্রবর্তনের উদ্দেশ্যগুলি কী ছিল ?

ভারতে উনবিংশ শতাব্দীর পঞম দশকে রেল যােগাযােগের মাধ্যমে আধুনিক পরিবহন ও যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতি আরম্ভ হয়। লর্ড ডালহৌসি ১৮৫৩ খ্রিঃ ১৬ই এপ্রিল মুম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত ভারতে প্রথম রেলপথ চালু করেন।

ভারতে রেলপথ প্রবর্তনের উদ্দেশ্য

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারতে রেলপথ নির্মাণের পশ্চাতে তিনটি উদ্দেশ্য ছিল

১) রাজনৈতিক

বিশাল ভারতবর্ষেইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই প্রশাসনিক কাজে দ্রুতসংবাদ আদান-প্রদান ও যােগাযােগ রক্ষার প্রয়ােজন অনুভূত হয়। এছাড়া ব্রিটিশ সরকার আরও মনে করে যে, ভারতে রেলপথের প্রসার ঘটলে বহু ইংরেজের কর্মসংস্থানের সুযােগ ঘটবে। ভারতে রেলপথ স্থাপনের এটাই ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।

২) সামরিক

ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইংরেজ শাসকরা এই বিদ্রোহ দমনে বিভিন্ন স্থানে দ্রুত সেনা পাঠানাের জন্য রেলপথ স্থাপনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে মহাবিদ্রোহের পর ইংরেজ সরকার সামরিক প্রয়ােজনে ভারতে রেলপথ নির্মাণের গুরুত্ব ভালাে রকম উপলব্ধি করে। তাই দেখা যায় বাণিজ্যিক গুরুত্ব ছিল না এমন বহু স্থানেও শুধু সামরিক প্রয়ােজনে রেলপথ স্থাপিত হয়।

৩) অর্থনৈতিক

ভারতে রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যই ছিল সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমত, ইংল্যাণ্ডের কারখানাগুলিতে উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে সেখানে কাঁচামালের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ভারত থেকে উৎপাদিত কাঁচামাল ইংল্যাণ্ডের কারখানাগুলিতে প্রেরিত হয়। ভারতের অভ্যন্তর থেকে কাঁচামাল দ্রুত বন্দরে পৌঁছানাের উদ্দেশ্যে রেল যােগাযােগের প্রয়ােজন অনুভূত হয়। ডঃ সব্যসাচী ভট্টাচাৰ্যবলেছেন, “এইসব লাভের লােভই ছিল আসল কথা, এদেশের অর্থনীতির আধুনিকীকরণ মােটেই নয়।”

দ্বিতীয়ত, ইংল্যাণ্ডেশিল্পবিপ্লবের ফলে সেখানকার কারখানাগুলিতে প্রচুর পণ্যসামগ্রী উৎপাদিত হতে থাকে। এসব সামগ্রী ভারতের অভ্যন্তরে। দূরদূরান্তের বাজারগুলিতে পৌছে দেওয়ার জন্য উন্নত যােগাযােগব্যবস্থার। প্রয়ােজন অনুভূত হয়।

তৃতীয়ত, শিল্পবিপ্লবের ফলে শিল্পপতিদের হাতে উদ্বৃত্ত পুজি ভারতের লাভজনক, নিরাপদ ও সুবিধাজনক ক্ষেত্রে বিনিয়ােগ করতেউৎসাহী ছিল। পুঁজিপতিদের কাছে ভারতে রেলপথ নির্মাণ অন্যতম লাভজনক ও নিরাপদ ক্ষেত্র বলে মনে হয়। তারা মনে করে যে, ভারতে রেলব্যবস্থা চালু হলে রেললাইন, ইঞ্জিন, মালগাড়ি ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে তারা প্রচুর মুনাফা অর্জন করবে।

৪) দুর্ভিক্ষের মােকাবিলা

ঔপনিবেশিক আমলে ভারতে দুর্ভিক্ষ ছিল নিয়মিত ঘটনা। দুর্ভিক্ষ কবলিত এলাকায় দ্রুত খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী পৌছানাের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার রেল যােগাযােগের প্রয়ােজন উপলদ্ধি করে।

উপরােক্ত আলােচনা থেকে স্পষ্টতই বােঝা যায় যে, ভারতীয়দের কল্যাণসাধনের উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, সম্পূর্ণভাবে ব্রিটিশরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যেই ভারতে রেলপথ থাপনের উদ্যোগ নেয়। মূলতঃ ভারতে রেলপথ স্থাপনের পশ্চাতে ইংরেজদের বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী ও শােষণমূলক উদ্দেশ্য কাজ করেছিল।

Download PDF

Please wait..
If the download didn’t start automatically, click here.

Leave a reply