Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

নুরজাহান কীভাবে মােগল রাজকর্তৃত্বের উপর প্রভাব স্থাপন করেছিলেন?

নুরজাহান কীভাবে মােগল রাজকর্তৃত্বের উপর প্রভাব স্থাপন করেছিলেন?

সিংহাসনে আরােহণের ছয় বছর পর ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে, জাহাঙ্গির মেহেরউন্নিসা নামক এক রূপবতী মহিলাকে বিবাহ করে প্রধানা মহিষীর (বাদশা বেগম) মর্যাদা দেন। ইনিই ইতিহাসেনুরজাহান নামে খ্যাত। জাহাঙ্গিরের রাজত্বকালের শেষদিকে নুরজাহানকে কেন্দ্র করে মুঘল দরবারে যে গােষ্ঠী বা চক্র গড়ে উঠেছিল তা নুরজাহান চক্র’ নামে পরিচিত।

নুরজাহানের প্রভাব 

নুরজাহান যে কেবলমাত্র অসামান্য রূপবতী মহিলাই ছিলেন তা নয়, জ্ঞানে ও গুণেও তিনি ছিলেন অসামান্য।

প্রশাসনে হস্তক্ষেপ

উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার চরিত্রের একটি বৈশিষ্ট্য ছিল। অল্পকালের মধ্যেই তিনি সম্রাটের ওপর প্রভাব বিস্তার করে রাষ্ট্রব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে আরম্ভ করেন।

সিংহাসনে পশ্চাশক্তি

এভাবে তিনি একটি নিজস্ব গােষ্ঠী গড়ে তােলেন। শেষদিকে প্রকৃতপক্ষে জাহাঙ্গিরের নামে নুরজাহানই প্রশাসন চালাতে থাকেন। নুরজাহানের নামে মুদ্রা প্রবর্তিত হয় এবং সরকারি ফরমানে জাহাঙ্গিরের স্বাক্ষরের পাশে নুরজাহানেরও স্বাক্ষর দেওয়া হতে থাকে।

ক্ষমতাবৃদ্ধির প্রচেষ্টা 

তিনি ক্রমেই তার ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য অধিক সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তার ভ্রাতা ও তার পিতা উভয়েই উচ্চরাজপদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। তার প্রথম বিবাহের কন্যার সঙ্গে জাহাঙ্গিরের পুত্র শাহরিয়ার বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। জাহাঙ্গিরের রাজত্বকালের শেষদিকে শাহরিয়ার-এর জন্য সিংহাসন সুরক্ষিত করতে তিনি অতিমাত্রায় ব্যস্ত হয়েছিলেন।

রাজশক্তি গ্রাস 

১৬২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নুরজাহান তার পিতা, ভ্রাতা ও খুররম-এর সাহায্যে ক্রমশ মােগল রাজশক্তিকে গ্রাস করেন। নুরজাহানের সম্মতি ব্যতীত অভিজাতদের পক্ষে রাজকীয় পদ ও সম্মানলাভ করা সম্ভব ছিল না।

নুরজাহান-শাহজাহানের মতপার্থক্য 

নুরজাহান তার প্রথম পক্ষের কন্যা লাডলি বেগমের সঙ্গে জাহাঙ্গিরের কনিষ্ঠ পুত্র শাহরিয়ারের বিবাহ দেন। এর ফলে নুরজাহান- শাহজাহান মতপার্থক্য শুরু হয়। এছাড়া তিনি কান্দাহার পুনরুদ্ধারের জন্য শাহজাহানকে নির্দেশ দেন কিন্তু শাহজাহান তা অমান্য করেন ও বিদ্রোহী হন।

মহাবত খাঁর বিদ্রোহ দমন 

দরবারি রাজনীতিতে মহাবত খাঁ-র ক্ষমতা হ্রাস করার উদ্দেশ্যে নুরজাহান তাকে বাংলায় প্রেরণ করেন ও রাজদ্রোহিতার অভিযােগ আনেন। এর প্রতিক্রিয়ারূপে মহাবত খাঁ বিদ্রোহ করেন। নুরজাহান অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে এই বিদ্রোহ দমন করেন।

পর্যালােচনা 

১৬২৭ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট জাহাঙ্গিরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই নুরজাহানের রাজকর্তৃত্বও হ্রাস পায়। মােগল রাজনীতিতে নুরজাহানের কর্তৃত্ব সম্পর্কে ঐতিহাসিক বিতর্ক রয়েছে।

উপসংহার

মােগল রাজকর্তৃত্বের উপর নুরজাহানের প্রভাব স্থাপনের ঘটনা শেষ পর্যন্ত মােগল সাম্রাজ্যের যথেষ্ট ক্ষতির কারণ হয়েছিল এবং দরবারে নানা দলগত বিরােধের সৃষ্টি করেছিল। রাজঅন্তঃপুর একটি রাজনৈতিক চক্রান্তের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। তারই চক্রান্তের ফলে প্রথমে শাহজাহান, পরে বিশ্বস্ত সেনাপতি মহাবৎ খাঁ বিদ্রোহী হতে বাধ্য হয়েছিলেন। এই সমস্ত কারণে তার ক্ষমতাপ্রিয়তা সাম্রাজ্যের যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করেছিল।

Leave a reply