Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

ছোটনাগপুর অঞ্চল ধাতব শিল্পে উন্নত কেন?

ছোটনাগপুর অঞ্চল ধাতব শিল্পে উন্নত কেন

ছোটনাগপুর ভারতের একটি অগ্রগণ্য শিল্পাঞ্চল। স্থানীয় খনিভিত্তিক ধাতব সম্পদের ওপর ভিত্তি করে ছোটনাগপুর অঞ্চলে বিভিন্ন শিল্প বিকাশ লাভ করেছে। এদের মধ্যে ধাতব শিল্প অন্যতম। ধাতব শিল্প মূলত সেই সমস্ত কাঁচামালের উপর নির্ভরশীল, যেগুলো শিল্পে ব্যবহারের পর নিজস্ব ওজন অনেকটাই হারিয়ে ফেলে। স্বভাবতই শিল্পজাত সামগ্রী বাজারে নিয়ে যেতে অপেক্ষাকৃত কম পরিবহন ব্যয়ের দরকার হয়। ছোটনাগপুর শিল্পাঞ্চলের শিল্পের মধ্যে প্রধান হল লৌহ-ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, শোধন, দস্তা প্রভৃতি ধাতব শিল্প। ছোটনাগপুর শিল্পাঞ্চলে গড়ে ওঠা বিভিন্ন শিল্পের মধ্যে জামসেদপুর ও বোকারোর লৌহ-ইস্পাত শিল্প, মুরির অ্যালুমিনিয়াম শিল্প, ঘাটশিলার তাম্র শোধনাগর, মৌভান্ডারের তামার কারখানা এবং টুন্ডুর দস্তা কারখানা উল্লেখযোগ্য।

ছোটনাগপুর অঞ্চল ধাতব শিল্পে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণগুলো হল :

(১) প্রয়োজনীয় কাঁচামালের সহজলভ্যতা 

লৌহ ইস্পাত শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় আকরিক লোহা (ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সিংভূম জেলার বিভিন্ন অঞ্চল), কয়লা (বিশেষত ঝরিয়া-ধানবাদ, বোকারো, গিরিডি প্রভৃতি), চুনাপাথর (পালামৌ, হাজারিবাগ, রাঁচী ও সিংভূম জেলা), ম্যাঙ্গানিজ (কালাহান, চাইবাসা এবং সিংভূম অঞ্চল), ক্রোমাইট (রাঁচী, সিংভূম ও ভাগলপুর জেলা) অ্যালুমিনিয়াম শিল্পের জন্য বক্সাইট (লোহারডাগা, রাঁচী ও পালামৌ অঞ্চল), তাম্র শিল্পের জন্য তাম্র আকরিক (সিংভূম জেলার রাখা, বাহারগোড়া, মুসাবনি প্রভৃতি অঞ্চল) প্রভৃতি খনিজ দ্রব্য ছোটনাগপুর অঞ্চলে প্রচুর পাওয়া যায় বলে এখানে ধাতবশিল্প গড়ে ওঠার প্রচুর সুবিধা রয়েছে।

(২) বিদ্যুৎশক্তির প্রাচুর্য

অ্যালুমিনিয়াম, তামা ও লৌহ-ইস্পাত শিল্প একান্তভাবে বিদ্যুৎ নির্ভর। এছাড়া যে-কোন শিল্পে বিদ্যুৎ শক্তি অপরিহার্য। ছোটনাগপুর অঞ্চলের বোকারো, চন্দ্রপুরা, সাঁওতালডি, পাত্ৰাতু প্রভৃতি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং মাইথন, পাঞ্চেৎ, তিলাইয়া প্রভৃতি দামোদর নদী পরিকল্পনার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে প্রাপ্ত অপর্যাপ্ত শক্তিসম্পদের প্রাচুর্য এই অঞ্চলের শিল্পোন্নতির সহায়ক হয়েছে।

(৩) সুলভ শ্রমিক

রুক্ষ প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য এই অঞ্চলে কৃষির সুযোগ কম বলে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড় রাজ্য থেকে এখানে সস্তায় এবং সহজে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়।

(৪) বন্দরের নৈকট্য

সুবিশাল কলকাতা, পারাদ্বীপ ও হলদিয়া বন্দরের নৈকট্য এই অঞ্চলে বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি এবং তৈরি মাল বিদেশে রপ্তানির সহায়ক হয়েছে।

(৫) উন্নত সড়ক ও রেল পরিবহন ব্যবস্থা

পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ এবং একাধিক জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের মাধ্যমে ছোটনাগপুর অঞ্চলটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় তা শিল্পোন্নতির খুবই সহায়ক হয়েছে।

(৬) সুলভ জলসম্পদ

ছোটনাগপুর অঞ্চলের দামোদর, সুবর্ণরেখা, কোয়েল, খরকাই প্রভৃতি নদীর অফুরন্ত জলসম্পদ এই অঞ্চলের বিভিন্ন ধাতব শিল্পের বিপুল পরিমাণ জলের চাহিদা মেটায়।

(৭) ধাতব শিল্পের বিরাট বাজার

মধ্য ও পূর্ব ভারতের প্রায় কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হওয়ার জন্য সারা ভারতেই ছোটনাগপুরে উৎপাদিত ধাতব শিল্প সামগ্রীর বিপুল চাহিদা ও বাজার রয়েছে। উন্নত সড়ক ও রেল পরিবহন ব্যবস্থা এবং নিকটবর্তী হলদিয়া ও কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই এই অঞ্চলের উৎপাদিত ধাতব পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।

[maxbutton id=”1″ text=”Download Note PDF” url=”https://sub2unlock.xyz/501a” linktitle=”tooltip” window=”new” nofollow=”true”]

Leave a reply