Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

প্রার্থনা সমাজ ও আর্য সমাজের নেতৃত্বে সংস্কার আন্দোলনের বিবরণী দাও।

প্রার্থনাসমাজ 

কেশবচন্দ্র সেনের প্রভাবে ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে মুম্বাই শহরে প্রার্থনা সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। আত্মারাম পাড়ুরঙ্গ ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা। মহাদেব গােবিন্দ রানাডে ও পন্ডিত রামকৃয় গােপাল ভান্ডারকর এই সমাজে যােগ দিলে প্রার্থনা সমাজের আন্দোলন আরও জোরদার হয়।

প্রার্থনা সমাজের সংস্কার আন্দোলনের প্রধান বিষয়গুলি ছিল , পৃশ্যতা ও জাতিভেদ প্রথার বিরােধিতা। বিধবা বিবাহ প্রচার, স্ত্রী শিক্ষার প্রসার,পর্দাপ্রথার অবসান, বাল্যবিবাহের প্রকোপ হ্রাস ইত্যাদি। প্রার্থনা সমাজ ‘অদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী ছিল এবং নামদেব, তুকারাম, রামদাস প্রমুখ মহারাষ্ট্রীয় ধর্মাচার্যদের মূলনীতি অনুসরণ করত। প্রার্থনা সমাজের অন্যতম নেতা মহাদেব গােবিন্দ রানাডের উদ্যোগে অনেকগুলি শিশুসদন, অনাথ আশ্রম ও বিধবা আশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘বিধবা-বিবাহ সমিতি’ গঠন করেন। প্রার্থনা সমাজের উদ্যোগে ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ডেকান এডুকেশন সােসাইটি’ ও ‘সমাজসেবা লিগ’ প্রভৃতি সংস্থা স্থাপিত হয়, প্রার্থনা সমাজের সদস্যরা ছিলেন সমাজসেবায় নিবেদিত প্রাণ। ব্রাত্যসমাজের অনুগামী হলেও প্রার্থনা সমাজ ব্রাহ্র সমাজের তুলনায় সমাজ সংস্কার আন্দোলনে বেশি সাফল্য অর্জন করেছিল। প্রার্থনা সমাজ হিন্দু ধর্মের কাঠামাের মধ্যে থেকেও প্রগতিশীল সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল।

আর্যসমাজ

আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী। তিনি সংস্কৃত সাহিত্যে সুপণ্ডিত ছিলেন। কিন্তু পাশ্চাত্য শিক্ষার সঙ্গে তার কোনাে পরিচয় ছিল না। তার প্রতিষ্ঠিত ধর্মসংস্কার আন্দোলনের মূল ভিত্তি ছিল বেদ। বেদের নির্দেশ ও আদর্শ অনুযায়ী তিনি সমাজ গঠন করার পক্ষপাতি ছিলেন। রামমােহনের ন্যায় তিনিও ছিলেন একেশ্বরবাদী ও অ-পৌত্তলিক। তিনিও বর্ণপ্রথা, বাল্যবিবাহ প্রভৃতি রীতি-নীতির ঘাের বিরােধী ছিলেন। সমুদ্রযাত্রা, বিধবাবিবাহ, স্ত্রী-শিক্ষা প্রভৃতি ব্যাপারে তিনি উৎসাহী ছিলেন। দয়ানন্দ কর্তৃক প্রবর্তিত ধর্ম আন্দোলনের প্রধান বৈশিষ্ট হল শুদ্ধি’ অর্থাৎ অহিন্দুকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিতকরণ। শুদ্ধি আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল “ভারতকে এক জাতি এক ধর্ম এবং এক সমাজে ঐক্যবদ্ধ করা”। দয়ানন্দ নিজের মতবাদ প্রচারকল্পে ‘সত্যার্থ প্রকাশ’ নামে একখানি গ্রন্থ প্রকাশ করেন।

ভারতে শিক্ষা ও সামাজিক সংস্কারের ক্ষেত্রে আর্যসমাজের অবদান কম গৌরবের নয়। দয়ানন্দের মৃত্যুর পর লালা হংসরাজ, পণ্ডিত গুরুদত্ত, স্বামী শ্রধান প্রমুখ আর্যসমাজী নেতৃবৃন্দ আর্যসমাজকে অধিকতর জনপ্রিয় ও শক্তিশালী করে তুলেছিলেন।

আর্য সমাজের গুরুত্ব সম্পর্কে পানিকর বলেন জাতীয়তাবাদী অগ্রগতির দিক দিয়ে এবং খ্রিস্ট ও ইসলাম ধর্মমতের প্রতিবাদী সংস্থা হিসাবে আর্য সমাজের গুরুত্ব কম নয়। উত্তর ভারতে হিন্দু ধর্মকে শক্তিশালী করে তুলতে আর্যসমাজের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a reply