Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতি কী ছিল? ভারতে ব্রিটিশ বাণিজ্যের বিস্তার আলোচনা করো।

ভারতে কোম্পানির ঔপনিবেশিক বাণিজ্য নীতির দুটি দিক ছিল :

(১) সস্তায় ভারতীয় বাজার থেকে পণ্যসামগ্রী কিনে ইউরোপের বাজারে অধিক দামে বিক্রি করে অধিক মুনাফা লাভ করা।

(২) ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের ফলে প্রস্তুত ভোগ্য পণ্যসামগ্রী ভারতের মতো বিশাল বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে প্রভূত মুনাফা লাভ করা।

বাণিজ্যের বিস্তার

ভারতে ব্রিটিশ বাণিজ্যের প্রসারের দুটি পর্যায় লক্ষ করা যায়  প্রথম পর্যায় (১৭১৭-১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ) ও দ্বিতীয় পর্যায় (১৭৫৭-১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ)।

প্রথম পর্যায়

এই পর্যায়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের কুটির শিল্পজাত দ্রব্যাদি ইউরোপের বাজারে রপ্তানির ওপর অধিক মনোনিবেশ করে। এই সময় বিদেশি কোম্পানিরূপে পোর্তুগিজ, ওলন্দাজ ও ফরাসি বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলির সঙ্গে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়। কিন্তু মোগল সম্রাটদের আনুকূল্য ও উদাসীনতা ইংরেজ কোম্পানির মুনাফা বাড়িয়ে তোলে। অন্যান্য কোম্পানিকে বলপ্রয়োগ এবং বাজার দখলের সাহায্যে ব্রিটিশ কোম্পানি অল্প সময়েই তাদের কোণঠাসা করে তোলে। তাছাড়া ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলি ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে গড়ে তোলায় ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক প্রসার ঘটে।

দ্বিতীয় পর্যায়

দ্বিতীয় পর্যায় ছিল ভারতে ইংরেজ কোম্পানির বাণিজ্য প্রসারের মূল ক্ষেত্র। পূর্ববর্তী পর্যায়ে কোম্পানি যে শক্ত ভিত্তি স্থাপন করে তার ওপর বাণিজ্যিক একাধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। পলাশির যুদ্ধের পর বাংলার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রাধান্য বিস্তার তথা ব্যক্তিগত বাণিজ্যের (Private trade) বিকাশ কোম্পানির রপ্তানি বাণিজ্যকে বিস্তার লাভে সাহায্য করে। বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ ও বাংলার দেওয়ানি লাভের ফলে কোম্পানির সম্পদ বৃদ্ধি হলে বাণিজ্যনীতিরও পরিবর্তন ঘটে। দেশীয় অর্থনৈতিক সম্পদে মাল খরিদ করে ও দেশীয় সম্পদকে বিভিন্ন যুদ্ধে কাজে লাগিয়ে ইংরেজ কোম্পানি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই অন্যান্য বিদেশি কোম্পানির তুলনায় বিস্তার লাভ করে।

ইতোমধ্যে ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লব ঘটলে কোম্পানি তার রপ্তানি বাণিজ্যের চরিত্রগত পরিবর্তন সাধন করে। ভারতে তৈরি কুটির শিল্পজাত দ্রব্য রপ্তানি বন্ধ করে কোম্পানি ইউরোপের বাজারে ভারতের কাঁচামাল রপ্তানি শুরু করে। ফলে ভারতীয় বস্ত্রশিল্প, বণিক ও কুটিরশিল্পীদের ক্ষতি হলেও ম্যাঞ্চেস্টারের কারখানাগুলির চাকা গতিলাভ করে। ইংল্যান্ডের শিল্পপতিদের চাপে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের বিলোপ ঘটে। ভারতের বাজার ইংল্যান্ডের বণিক ও শিল্পপতিদের উন্মুক্ত ক্ষেত্রে পরিণত হয়। ফলে একই সঙ্গে কাঁচামালের রপ্তানি ও ইংল্যান্ডের শিল্পজাত ভোগ্যপণ্যের আমদানি অসম্ভব বৃদ্ধি পায়।

Leave a reply