দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বরাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সাম্যবাদী রাশিয়ার নেতৃত্বে বিশ্ব দুটি বিবদমান শিবিরে ভাগ হয়ে যায়। সদ্য স্বাধীন ভারতবর্ষ এই দুটি শিবিরের কোনোটিতেই যোগ না দিয়ে যে নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করে বৈদেশিক সম্পর্ক গড়ে তোলে তা জোটনিরপক্ষ নীতি নামে পরিচিত।

জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রধান নীতি

বিভিন্ন সম্মেলনে জোটনিরপেক্ষ সম্পর্কিত কতকগুলি নীতি গৃহীত হয়েছিল। সেগুলি হল-

1. বিভিন্ন দেশের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনকে স্বাগত জানানো।
2. সাম্রাজ্যবাদী শোষণের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা।
3. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া।
4. দুর্বল রাষ্ট্রের ওপর বৃহৎ শক্তিবর্গের চাপ ও বলপ্রয়োগ নীতির বিরোধিতা করা।
5. সমস্ত রাষ্ট্রের সার্বভৌম অধিকার ও অখণ্ডতাকে স্বীকৃতি দেওয়া।
6. শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন পারস্পরিক সমস্যার সমাধান করা।
7. পরস্পরের স্বার্থরক্ষা ও সহযোগিতাকে আরও বৃদ্ধি করা।

উপসংহার

জোটনিরপেক্ষ নীতি বিভিন্নভাবে সমালোচিত হলেও এই নীতি যে বিশ্বশাস্তি রক্ষার্থে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তার মূল্যও কম নয়। সদ্যস্বাধীন দেশগুলো যে বৃহৎ শক্তির টানাটানির হাত থেকে বিরত থাকতে পেরেছিল তা জোটনিরপেক্ষ নীতিরই দান বলা যায়।