Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদান ও স্তরবিন্যাস এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

Table of Contents

বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদান ও স্তরবিন্যাস

বায়ুমণ্ডলের উপাদান বায়ুমণ্ডল প্রধানত (১) বিভিন্ন গ্যাসের মিশ্রণ, (২) জলীয় বাষ্প এবং (৩) জৈব ও অজৈব কণিকা নিয়ে গঠিত।

[১] বিভিন্ন গ্যাসের মিশ্রণ

বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে নাইট্রোজেনের পরিমাণ সর্বাধিক (৭৮.১%) এবং তার পরেই অক্সিজেনের স্থান (২০.৯%)। এরা মিলিতভাবে বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৯৯% অধিকার করে আছে। এরা ছাড়া বায়ুমণ্ডলের বাকি মাত্র ১ ভাগ অংশে কার্বন ডাই-অক্সাইড, আগন, নিওন, হিলিয়াম, ক্রিপটন, জেনন, হাইড্রোজেন, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ওজোন প্রভৃতি নানা গ্যাস রয়েছে।

বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের গুরুত্ব 

বায়ুতে উপস্থিত বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে নাইট্রোজেন বায়ুতে নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিসেবে অবস্থান করলেও বায়ুর নাইট্রোজেন বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উদ্ভিদের গ্রহণযোগ্য খাদ্যে পরিণত হয়। অক্সিজেন জীবের শ্বাসকার্য, শক্তি উৎপাদন ও তাপ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে; কার্বন ডাই-অক্সাইড উদ্ভিদের খাদ্য উৎপাদন, সৌরতাপ শোষণ ও বণ্টনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে এবং বায়ুতে অবস্থিত ওজোন গ্যাস প্রাণিজগতের পক্ষে ক্ষতিকর সূর্যালোকের অতি বেগুনি রশ্মিকে ভূ-পৃষ্ঠে আসতে বাধা দেয়।

[২] জলীয় বাষ্প

বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প সৌরতাপ শোষণ করে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে তাপ বিকিরণে বাধা দেয়। মূলত জলীয়বাষ্পের উপস্থিতির জন্যেই মেঘ, বৃষ্টি, তুষারপাত, কুয়াশা প্রভৃতির সৃষ্টি হয়।

[৩] জৈব ও অজৈব কণিকা

বায়ুমণ্ডলের উপস্থিত বিভিন্ন ধরনের জৈব ও অজৈব কণিকাগুলির মধ্যে প্রধান হল : (১) অতি ক্ষুদ্র খনিজ লবণ, (২) সমুদ্রতীরের ছোটো বালুকণা এবং (৩) কয়লার গুঁড়ো বা ধোঁয়া।

বায়ুমণ্ডলের স্তর বিন্যাস 

[১] উচ্চতা ও তাপমাত্রার তারতম্য অনুসারে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস

উচ্চতা ও তাপমাত্রার তারতম্য অনুসারে পৃথিবীর চতুর্দিকের বায়ুমণ্ডলকে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা যায়, যেমন :

(১) ট্রোপোস্ফিয়ার

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ঊর্ধ্বের বায়ুস্তরকে ট্রপোস্ফিয়ার বলে। বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৯০% জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা, ধোঁয়া প্রভৃতি এই স্তরে অবস্থান করে। বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব এই স্তরেই সবচেয়ে বেশি। ট্রোপোপজ স্তর পর্যন্ত এই স্তরের উষ্ণতা ক্রমশ কমে যেতে থাকে।

(২) স্ট্রাটোস্ফিয়ার

ট্রোপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে ১৮-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্রাটোস্ফিয়ার বলে। এই স্তরে ধূলিকণা, ধোঁয়া প্রভৃতি না থাকলেও ওজোন গ্যাস এবং সামান্য পরিমাণ জলীয়বাষ্প দেখা যায়। ওজোন স্তরের উপস্থিতির জন্য এই স্তর ভেদ করে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারে না। এই স্তরে বায়ুর ঘনত্ব কম। স্ট্রাটোস্ফিয়ারের ওপরের সীমা স্ট্র্যাটোপজ নামে পরিচিত।

(৩) ট্রোপোপজ

ট্রোপোস্ফিয়ার এবং স্ট্রাটোস্ফিয়ারের দুই বায়ুস্তরের সীমা নির্দেশক সংযোগস্থলকে ট্রোপোপজ বলে।

(৪) আয়নোস্ফিয়ার

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৮০-৬৪০ এক্সোস্ফিয়ার কিমি. পর্যন্ত বিস্তৃত হালকা বায়ুস্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলে। অসংখ্য আয়নবা তড়িৎগ্রস্থ কণার অস্তিত্বের জন্য এই স্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলা হয়ে থাকে। উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই স্তরের উষ্ণতা দ্রুতহারে বেড়ে যায়। এই স্তরের মধ্যে রেডিও তরঙ্গগুলি ঘুরে পৃথিবীতে ফিরে আসে। এই বায়ুস্তরে মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভার সৃষ্টি হয়।

(৫) এক্সোস্ফিয়ার

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৬৪০ কিলোমিটার ওপরের ঊর্ধ্বের বায়ুস্তর এক্সোস্ফিয়ার নামে পরিচিত। এখানে বায়ু এত হালকা যে তার অস্তিত্ব প্রায় বোঝাই যায় না।

(৬) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার

এক্সোস্ফিয়ারের ওপর অবস্থিত বায়ুমণ্ডলের সর্বশেষ এই স্তরের বায়ুমণ্ডলের জন্যেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের আয়নিত কণার উপস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হয়।

[২] গঠন বিন্যাসের তারতম্য অনুসারে বায়ুমণ্ডলের স্তর বিন্যাস

রাসায়নিক গঠনের তারতম্য অনুসারে প্রধান দুটি স্তর হল : হোমোস্ফিয়ার এবং হেটেরোস্ফিয়ার।

(১) হোমোস্ফিয়ার

ভূপৃষ্ট থেকে ৮০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত অংশে বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক গঠন এবং বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত প্রায় একই রকম হওয়ায়, বায়ুমণ্ডলের এই স্তরকে হোমোস্ফিয়ার বলা হয়।

হোমোস্ফিয়ার প্রধানত : (১) নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রভৃতি বিভিন্ন গ্যাসের মিশ্রণ, (২) জলীয়বাষ্প এবং (৩) জৈব ও অজৈব কণিকা দিয়ে গঠিত।

(২) হেটেরোস্ফিয়ার

বায়ুমণ্ডলের হোমোস্ফিয়ার স্তরের ওপরের অংশে বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত এবং বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলো একই রকম থাকে না বলে ভূ-পৃষ্ঠের ওপরে ৮০ কিলোমিটার থেকে ১০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে হেটেরোস্ফিয়ার বলা হয়।

হেটেরোস্ফিয়ারের বায়ুমণ্ডল মোটামুটি চারটি স্তরে বিভক্ত, যথা :

  1. আণবিক নাইট্রোজেন স্তর (৮০-২০০ কিমি.) ।
  2. পারমাণবিক অক্সিজেন স্তর (২০০-১,১০০ কিমি.)।
  3. হিলিয়াম স্তর (১,১০০-৩,৫০০ কিমি.)।
  4. হাইড্রোজেন স্তর (৩,৫০০-১০,০০০ কিমি.)।

Frequently Asked Questions

Leave a reply