Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ আলোচনা করো।

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ

নিম্নলিখিত বিভিন্ন কারণে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় :

■ [১] নিয়ত বায়ুপ্রবাহ

আধুনিক বৈজ্ঞানিকদের মতে, নিয়ত বায়ুপ্রবাহই সমুদ্র স্রোতের প্রধান কারণ। নিয়ত বায়ুপ্রবাহ এবং সমুদ্র স্রোতের গতি লক্ষ করলে দেখা যায় যে, প্রবল নিয়ত বায়ুপ্রবাহ নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হওয়ার সময় সমুদ্রস্রোতকেও নিজের প্রবাহ পথের দিকে টেনে নিয়ে যায়, যেমন: (ক) যেসব স্থানে আয়ন-বায়ু প্রবাহিত হয় সেইসব স্থানে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে নিরক্ষরেখার দিকে সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হয় হয়, (খ) যেসব স্থানে পশ্চিমাবায়ু প্রবাহিত হয় সেইসব স্থানে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হয়, আবার (গ) মেরু বায়ুর প্রভাবে পূর্ব থেকে পশ্চিমে সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হয়।

■ [২] পৃথিবীর আবর্তন গতি

নিজের আবর্তন গতির জন্য পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অবিরাম ঘুরে চলেছে। পৃথিবীর আবর্তনের জন্য ফেরেলের সূত্র অনুসারে বায়ুপ্রবাহের মতো সমুদ্রস্রোতেরও গতিবিক্ষেপ ঘটে এবং সমুদ্রস্রোত সরাসরি উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত হতে পারে না। পৃথিবীর আবর্তনের জন্য সমুদ্রস্রোতের গতি উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ দিকে বেঁকে যায়।

■ [৩] সমুদ্রের জলের উষ্ণতার তারতম্য

সূর্যরশ্মি ভূপৃষ্ঠের কোথাও লম্বভাবে, আবার কোথাও হেলানো বা তির্যকভাবে পড়ে। সূর্যরশ্মির পতন কোণের এই পার্থক্যের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্রের জলের উষ্ণতার মধ্যেও যথেষ্ট পার্থক্য লক্ষ করা যায়। উষ্ণতার সমতা বজায় রাখার জন্য তুলনামূলকভাবে উষ্ণ অঞ্চলের জলরাশি শীতল অঞ্চলের দিকে এবং শীতল অঞ্চলের জলরাশি উষ্ণ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

নিরক্ষীয় অঞ্চলের সমুদ্রজল সূর্যকিরণে উত্তপ্ত এবং আয়তনে বর্ধিত হয়ে বহিঃস্রোত হিসেবে শীতল মেরু প্রদেশের দিকে প্রবাহিত হয় এবং মেরু অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত শীতল এবং ঘন জল ঐ স্থান পূরণের জন্য সমুদ্রের গভীরতম অংশ দিয়ে অন্তঃস্রোত হিসেবে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

■ [8] সমুদ্রজলের লবণত্ব ও ঘনত্বের তারতম্য

সমুদ্রের জলে লবণের পরিমাণ সর্বত্র সমান নয়। সমুদ্র জলের লবণত্ব ও ঘনত্বের তারতম্যের জন্যেও সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি হয়, যেমন : লবণাক্ততার সমতা আনার জন্য সমুদ্রের কম লবণাক্ত হালকা জল সমুদ্রের ওপরের অংশ দিয়ে বেশি লবণাক্ত ভারী জলের দিকে বহিঃস্রোত হিসেবে প্রবাহিত হয়। আবার সমুদ্রের বেশি লবণাক্ত ভারী জল কম লবণাক্ত হালকা জলের দিকে অন্তঃস্রোত হিসাবে প্রবাহিত হয়। এইভাবে মেরু অঞ্চলের বেশি লবণাক্ত জল নিরক্ষীয় অঞ্চলের কম লবণাক্ত জলের দিকে এবং নিরক্ষীয় অঞ্চলের জল মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে।

■ [৫] উপকূলের ভূমিভাগের আকৃতি

বিভিন্ন মহাদেশ বা স্থলভাগের আকৃতি বিভিন্ন ধরনের। এর ফলে বিভিন্ন মহাদেশের উপকূলভাগ বা দ্বীপপুঞ্জে প্রতিহত হয়েও সমুদ্রস্রোতের গতি পরিবর্তিত হয়।

■ [৬] বিভিন্ন সমুদ্র স্রোতের মিলনস্থলে নতুন সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি

বিভিন্ন সমুদ্র স্রোতের মিলন স্থলে জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রিত হয়ে নতুন সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়। তবে এই ধরনের সমুদ্রস্রোতের ব্যাপকতা থাকে না এবং সাধারণত এগুলো সাময়িক স্রোত হিসেবেও পরিগণিত হয়।

Leave a reply