Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

পরিবেশবিদ্যার আলােচনার পরিধি ও প্রয়ােজনীয়তা কী?

পরিবেশবিদ্যার আলােচনার পরিধি ও প্রয়ােজনীয়তা কী?

পরিবেশবিদ্যার আলােচনার পরিধি পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীবজ পরিবেশ ও সামাজিক পরিবেশকে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছে। পরিবেশবিদ্যার আলােচনা থেকেই আমরা জানতে পারি পরিবেশের উদ্ভব ও বিবর্তন কীভাবে ঘটেছে, পরিবেশের বর্তমান সমস্যাগুলি কী, দুর্যোগ ও বিপর্যয় মানুষ ও পরিবেশকে কীভাবে বিপর্যস্ত করে।

পরিবেশ সম্পর্কে জানার গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবেশের জ্ঞান মানুষকে তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্বন্ধে সঠিক ধারণা দেয়। বিজ্ঞানসম্মত ও সামাজিকভাবে মানুষকে সচেতন করে তােলে।

পরিবেশ সম্পর্কে পাঠ নিলে মানুষ জানতে পারে পৃথিবী তার একার নয়। এই পাহাড়, নদী, সাগর, মাটি অর্থাৎ যা কিছু প্রকৃতির দান, তার সব কিছুতেই মানুষের যেমন অধিকার, তেমনি গাছপালা, পশু-পাখিরও সমান অধিকার। এই ধ্রুব সত্যকে আবার নতুন করে জানার ও উপলব্ধি করার জন্যই পরিবেশের পাঠ একান্ত জরুরি।

পরিবেশ পাঠের প্রয়ােজনীয়তা

(১) পৃথিবীর পরিবেশ কীভাবে তৈরি হয়েছে, তার উপাদান কী, এবং ওই উপাদানগুলি কীভাবেই বা নিজেদের মধ্যে কাজ করে সে সম্বন্ধে ধারণা করা যায়।

(২) এ পৃথিবীকে কেন জীবজগতের একমাত্র বাসভূমি বলা হয় সে ব্যাপারে জানা যায়।

(৩) পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে ধীরে ধীরে কীভাবে জীবজগতের উদ্ভব হয়েছে, সে ব্যাপারে বিজ্ঞানসম্মত ধারণা তৈরি হয়।

(৪) পরিবেশ পাঠের মধ্য দিয়ে বাস্তুতন্ত্র সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিক ধারণা জন্মায়। বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে পুষ্টির জোগান, শক্তির প্রবাহ এবং পুষ্টির জোগান অনুসারে প্রজাতির সংখ্যা সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা বুঝতে পারা যায়।

(5) সভ্যতার শুরু থেকে মানুষ কীভাবে পরিবেশের উপাদানগুলিকে কাজে লাগিয়ে নিজের আর্থসামাজিক উন্নতি করেছে, সে সম্বন্ধেও অবগত হওয়া যায়।।

(৬) কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, পরিবহণ ও যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে মানুষের জন্য খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, সুরক্ষা প্রভৃতির ব্যাপারে অর্থাৎ সামাজিক পরিবেশের বিষয়ে জানা যায়।

(৭) পরিবেশ সম্বন্ধে পাঠ নিলে পরিবেশের সঙ্গে মানুষের অর্থনৈতিক প্রগতির হার সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা সে সম্বন্ধেও ধারণা জন্মায়। ফলে সুস্থায়ী বা বহতা উন্নয়নের সপক্ষে জনচেতনার উন্মেষ হয়।

(৮) প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলি কেন সৃষ্টি হয়, তাদের নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি কি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষের কত ক্ষতি করে, তা বুঝতে পারা যায়।

(৯) মানুষ দূষণের মাধ্যমে পরিবেশের কতটা ক্ষতি করে, তার মাত্রা ও নিয়ন্ত্রণের উপায় জানার জন্যও পরিবেশ বিষয়ে পাঠ নেওয়া দরকার। বিভিন্ন রকমের দূষণ, যেমন- বায়ুদূষণ, জলদূষণ, শব্দদূষণ ইত্যাদি দুর্যোগগুলি সম্পর্কে পরিবেশ বিদ্যা থেকেই জানা যায়।

(১০) পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য এবং যে মানুষ পরিবেশের ক্ষতি করে, সেই মানুষকে তার অপরাধের জন্য কী শাস্তি দেওয়া যায়, সেই আইনগত ব্যবস্থাগুলি জানার জন্য পরিবেশ আইন সম্পর্কে পাঠ নিতে হয়। পরিবেশ বিজ্ঞান এ-কাজে সাহায্য করে।

(১১) জনস্বাস্থ্যের মান কেমন, কোন কোন কারণের জন্য জনস্বাস্থ্যের মান হ্রাস পায়, ও জনস্বাস্থ্যের মান উন্নয়ন করার জন্য কী কী বিজ্ঞানসম্মত পন্থা অবলম্বন করা যায়, সেগুলি জানার জন্য পরিবেশ পাঠের প্রয়ােজন আছে।

(১২) এই পৃথিবীকে মানুষের বাসযােগ্য করার জন্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশকে সুরক্ষিত করার উদ্দেশ্যে যে জনসচেতনতার প্রয়ােজন, সেই সার্বিক চেতনা তৈরি করার ব্যাপারে পরিবেশ পাঠের কোনাে বিকল্প নেই।

Leave a reply