উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের জাতীয় চেতনার উন্মেষের পরিণতি হল ইলবার্ট বিল আন্দোলন। ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার তাই বলেছেন—The Ilbert Bill greatly helped the cause of Indian Political advance.

ইলবার্ট বিল

জাতিভেদ মূলক বৈষম্য দূর করার জন্য লর্ড রিপনের পরামর্শে ভাইসরয়ের কাউন্সিলের ইলবার্ট নামে এক সদস্য একটি আইনের খসড়া তৈরি করেন যা ইলবার্ট বিল নামে পরিচিত। এতে বলা হয় যে, ভারতীয় বিচারকরা ইউরোপীয়দের বিচার করার ক্ষমতা পাবে। অর্থাৎ এই বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইউরোপীয় বিচারকদের সমতুল্য মর্যাদা দেওয়া হয়।

ইউরোপীয়দের ভূমিকা

ইলবার্ট বিলের খসড়া প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয়রা তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা যুক্তি দেখায় যে, ইউরোপীয়দের বিচার করার যোগ্যতা ভারতীয়দের নেই। তাই তারা সরকারের কঠোর সমালোচনায় মগ্ন হয়। ফলে ইউরোপীয়দের চাপের কাছে ব্রিটিশ সরকার নতি স্বীকার করে বিলের কতকগুলি উদারনৈতিক ধারা সংশোধন করতে বাধ্য হয়।

ভারতীয়দের আন্দোলন

ইউরোপীয়দের আন্দোলনের জবাবে ভারতীয়রাও নিজেদের স্বপক্ষে আন্দোলন গড়ে তোলে। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় সভাসমিতি অনুষ্ঠিত হতে থাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতীয়দের এই আন্দোলন ব্যর্থ হয়।

উপসংহার

ইলবার্ট বিল সংক্রান্ত ভারতীয়দের আন্দোলন ব্যর্থ হলেও এই আন্দোলন ভারতীয়দের চেতনাকে জাগ্রত করেছিল। ভারতীয়রা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থা ভারতবাসীর পক্ষে কখনোই মঙ্গলজনক হবে না। এর ফলে ভারতবাসীকে সংঘবদ্ধ আন্দোলনের পথেই পা বাড়াতে হয়েছিল।