Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

জলবিদ্যুৎ শক্তির সুবিধা ও অসুবিধা গুলি আলোচনা করো।

জলবিদ্যুৎ শক্তির সুবিধা ও অসুবিধা গুলি আলোচনা করো।

জলবিদ্যুৎ শক্তির সুবিধা ও অসুবিধা

জলবিদ্যুৎ শক্তির সুবিধা

অন্যান্য শক্তির উৎসের তুলনায় জলবিদ্যুৎ শক্তির অনেক সুবিধা আছে। যেমন—

(১) জলবিদ্যুৎ শক্তির ভাণ্ডার অফুরন্ত । একে বলে প্রবহমান শক্তি ( Flow energy )। কিন্তু কয়লা , খনিজ তেল , প্রাকৃতিক গ্যাস , ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম থেকে প্রাপ্ত শক্তি ক্ষয়িষ্ণু বা সঞ্চিত শক্তি ( Exhaustible or Fund energy )|

(২) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রাথমিক ব্যয় কিছুটা বেশি হলেও এর পৌনঃপুনিক বা আবর্তক ব্যয় ( Recurring expenditure ) অনেক কম । কিন্তু শক্তির অন্যান্য উৎসের ( কয়লা , খনিজ তেল ) ব্যবহারে প্রাথমিক ব্যয় কিছুটা কম হলেও আবর্তক ব্যয় খুব বেশি হয়। এই কারণে অন্যান্য শক্তির উৎসগুলির তুলনায় জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় অনেক কম হয়।

(৩) জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় ধোঁয়া , ছাই প্রভৃতি বর্জ্য পদার্থ নির্গত হয় না বলে এই বিদ্যুৎ ব্যবহারে পরিবেশ দূষিত হয় না অর্থাৎ এটি পরিচ্ছন্ন শক্তি। কিন্তু কয়লা বা খনিজ তেল থেকে শক্তি উৎপাদনের সময় ক্ষতিকর ছাই , ধোঁয়া প্রভৃতির সৃষ্টি হয় , যা পরিবেশ দূষিত করে।

(৪) কয়লা ও খনিজ তেলের তুলনায় জলবিদ্যুৎ অধিক তাপশক্তি উৎপাদনে সক্ষম। এই কারণে যেসব শিল্পে অধিক তাপশক্তির প্রয়োজন হয় ( যেমন — অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাশন শিল্প ) , সেগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কাছেই গড়ে ওঠে।

(৫) কয়লা , খনিজ তেল প্রভৃতি পরিবহনের জন্য আলাদা যান , পাইপ লাইন বা নলপথের প্রয়োজন হয় । কিন্তু জলবিদ্যুৎ শক্তি সহজেই ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে প্রেরণ করা যায়। বিশেষ অপচয় না করেই জলবিদ্যুৎ শক্তি ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে উৎপাদন কেন্দ্র থেকে বিতরণ কেন্দ্রে পাঠানো যায়। কিন্তু কয়লা , খনিজ তেল প্রভৃতি পরিবহনে যথেষ্ট অপচয় হয়।

(৬) জলবিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে কাঁচামাল সংরক্ষণ করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু অন্যান্য শক্তির কাঁচামাল সংরক্ষণশীল।

(৭) জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে শ্রমশক্তির প্রয়োজন কম হয় । কিন্তু কয়লা বা খনিজ তেলের ক্ষেত্রে উত্তোলন থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন পর্যন্ত প্রচুর শ্রমশক্তির প্রয়োজন হয়।

(৮) অন্যান্য শক্তির তুলনায় জলবিদ্যুতের বিভাজ্যতা ( Divisibility ) অনেক বেশি। যান্ত্রিক পদ্ধতির সাহায্যে এক ওয়াটকে সহজেই হাজার ওয়াটে বিভাজন করা যায়। এজন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রশিল্পে জলবিদ্যুৎ বেশি ব্যবহৃত হয়।

জলবিদ্যুৎ শক্তির অসুবিধা

অন্যান্য শক্তির উৎসের তুলনায় জলবিদ্যুৎ শক্তির কতকগুলি অসুবিধা আছে। যেমন—

(১) কেবল খরস্রোতা নদী বা জলপ্রপাতের কাছেই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হয়। কিন্তু কয়লা ও খনিজ তেল অন্যত্র বহন করে নিয়ে যাওয়া যায়।

(২) জলবিদ্যুৎ সঞ্চয় করা যায় না । কিন্তু কয়লা বা খনিজ তেল সঞ্চয় করা যায়।

(৩) শিল্পের প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন ছাড়াও কয়লা বা খনিজ তেল শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জলবিদ্যুৎ শক্তি কেবল শক্তি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়।

(৪) জলবিদ্যুৎ থেকে কোনো উপজাত দ্রব্য পাওয়া যায় না , কিন্তু কয়লা বা খনিজ তেল থেকে নানা ধরনের উপজাত দ্রব্য উৎপাদন করা যায়।

(৫) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে প্রচুর মূলধন এবং উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যার প্রয়োজন হয়। এই কারণে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জলবিদ্যুৎ খুবই কম উৎপাদিত হয়। শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে এইসব দেশে তাই কয়লা ও খনিজ তেলের ব্যবহার ও গুরুত্ব বেশি।

Leave a reply