Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

ভারতে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপনে রানী দুর্গাবতীর ভূমিকা আলােচনা করাে।

ভারতে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপনে রানী দুর্গাবতীর ভূমিকা আলােচনা করাে।

ভারতের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বসম্পন্ন নারীদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযােগ্য ছিলেন গন্ডােয়ানা অঞ্চলের গড়হা-কাটাঙ্গা রাজ্যের রাজা দলপত শাহর পত্নী রানি দুর্গাবতী। দুর্গাবতীর স্বামী দলপত শাহ’র মৃত্যু হলে দুর্গাবতী তার তিন বা পাঁচ বছর বয়স্ক শিশুপুত্রের (বীরনারায়ণ শাহ) রাজ-প্রতিনিধিরূপে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী রাজনীতিবিদ, সফল প্রশাসক ও প্রজাহিতৈষী শাসিকা।

রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপনে রানী দুর্গাবতীর ভূমিকা

রানি দুর্গাবতী মূলত দুটি কারণে রাজকর্তৃত্ব গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন – তার নাবালক পুত্রকে গাড়হা-কাটাঙ্গার নৃপতিরূপে প্রতিষ্ঠা করা। অভ্যন্তরীণ গােলযােগ ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে গাড়হা-কাটাঙ্গা রাজ্যকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধশালী করে তােলা।

রানি দুর্গাবতী আনুমানিক প্রায় ১৫ বছর সময় ধরে রাজপ্রতিনিধিরূপে বিভিন্ন কার্যকলাপ সম্পন্ন করেন।

প্রশাসনিক পদক্ষেপ 

রানি দুর্গাবতী বিত্তহর অধর সিংহ কায়স্থ নামক এক দক্ষ ব্যক্তিকে তার রাজ্যের দেওয়ান পদে এবং মান ঠাকুরকে মন্ত্রী পদে নিয়ােগ করেন। তার রাজধানীকে সুরক্ষিত করতে সিংহাউরগর থেকে সাতপুরা পর্বতশ্রেণির কোলে চৌরাগড়ে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।

আফগান আক্রমণ প্রতিরােধ 

রাজপ্রতিনিধিরূপে কাজ শুরুর প্রারম্ভিক পবেই পশ্চিম সীমান্তবর্তী অঞল ও হােসঙ্গাবাদের মিয়ান আফগানদের একটি শাখা কর্তৃক গাড়হা রাজ্য আক্রমণকে প্রতিহত করেন। মালবের শাসক বাজবাহাদুর (১৫৫০-এর দশকে) গাড়হা রাজ্য আক্রমণ করলে রানি দুর্গাবতী সুকৌশলে তাকে পরাজিত করেন।

রতনপুর রাজ্যের চক্রান্ত প্রতিহতকরণ 

রানি দুর্গাবতীর নেতৃত্বে গাড়হা-কাটাঙ্গার সমৃদ্ধি, মিয়ান আফগানদের মােকাবিলা ও তাদের পরাজিত করা এবং বাজবাহাদুরকে পর্যুদস্ত করার ঘটনায় গাড়হার প্রতিবেশী রাজ্যগুলি (রেওয়া, চাদ, রতনপুর, বড়া) ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল।

মােগল শক্তির সঙ্গে সংঘাত ও পরাজয় 

১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে মােগল সম্রাট আকবর বাজবাহাদুর শাসিত মালব রাজ্য দখল করেন। ফলে মােগল সাম্রাজসীমা দুর্গাবতীর রাজ্যসীমাকে স্পর্শ করে। আবার গাড়হা রাজ্যের প্রতিবেশী রেওয়া রাজ্যের ক্ষমতা দখলকারী শাসক আসফ খান ছিলেন আদতে মােগল মনসবদার। তিনিই মােগল সম্রাট আকবরকে রানি দুর্গাবতীর রাজ্য আক্রমণে প্ররােচিত করেন। নর্মদা ও গাউর নদীর মধ্যস্থলে অবস্থিত নরৈ নামক স্থানে মােগলদের সঙ্গে রানি দুর্গাবতীর যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে শেষপর্যন্ত রানি দুর্গাবতীর সৈন্যদল প্রথমে জয়লাভ করলেও পরদিন ভারী কামানের ব্যবহার করে মােগল বাহিনী জয়লাভ করে। শেষপর্যন্ত রানি দুর্গাবতী এই যুদ্ধে আহত হয়ে আত্মহত্যা করেন।

উপসংহার 

উপরােক্ত আলােচনা থেকে দেখা যায় রানি দুর্গাবতী গাড়হা-কাটাঙ্গা রাজ্যের স্বাধীন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। শক্তিশালী মােগল বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ না করেও সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

Download PDF

Please wait..
If the download didn’t start automatically, click here.

Leave a reply