Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

পশ্চিমবঙ্গের মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো। 

পশ্চিমবঙ্গের মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো। 

পশ্চিমবঙ্গের মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে জলবায়ু , জীবমণ্ডল , ভূপ্রকৃতি , আদিশিলা প্রভৃতির তারতম্যে বিভিন্ন প্রকার মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মৃত্তিকার এই শ্রেণিবিভাগ ছকের মাধ্যমে দেখানো হল —

পার্বত্য অঞ্চলের মাটি

অবস্থান : পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল অর্থাৎ দার্জিলিং , কালিম্পং , আলিপুয়ারদুয়ার প্রভৃতি জেলায় এই মাটি দেখতে পাওয়া যায়।

বৈশিষ্ট্য 

  1. এই মৃত্তিকার গভীরতা খুব কম।
  2. প্রধানত নিস শিলা থেকে সৃষ্ট এই মৃত্তিকা কিছুটা আম্লিক প্রকৃতির এবং এটি পডসল মাটি।
  3. এর রং প্রধানত ধূসর বাদামি।
  4. এই মৃত্তিকায় বেশি পরিমাণে নুড়ি , পাথর কাঁকর প্রভৃতি থাকে।
  5. এতে যথেষ্ট পরিমাণে জৈব পদার্থ থাকে।
  6. ভূমির ঢাল বেশি এবং বৃষ্টিবহুল অঞ্চল বলে এখানে মৃত্তিকা ক্ষয়ের সমস্যা খুব বেশি।

উৎপন্ন ফসল

এই মৃত্তিকায় চা , কমলালেবু , সিঙ্কোনা প্রভৃতি উৎপাদিত হয় ।

তরাই অঞ্চলের মাটি

অবস্থান

পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশে তরাই অঞ্চলে এই মাটি দেখা যায়।

বৈশিষ্ট্য

  1. এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন নদনদী হিমালয় ক্ষয়িত পদার্থসমূহ বহন করে এনে এখানে সঞ্চয় করার ফলে তরাই মৃত্তিকার সৃষ্টি হয়েছে।
  2. এই মাটিতে নুড়ি , কাঁকর , বালি প্রভৃতির পরিমাণ বেশি।
  3. গভীর বনভূমির জন্য মাটিতে জৈব পদার্থ বেশি থাকে।
  4. মাটির গভীরতা মধ্যম প্রকৃতির এবং
  5. এর রং ধূসর থেকে কালো।
  6. মাটির উর্বরতা মধ্যম প্রকৃতির।

উৎপন্ন ফসল

এই মাটিতে ধান , গম , চা , আলু প্রভৃতি চাষ করা হয় ।

মালভূমি অঞ্চলের মাটি

অবস্থান

পুরুলিয়া , বাঁকুড়া , বীরভূম , বর্ধমান , পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মালভূমি অঞ্চলে এবং মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বরেন্দ্রভূমি অঞ্চলে এই মাটি দেখা যায় ।

বৈশিষ্ট্য

  1. এখানে প্রধানত দুই ধরনের মাটি দেখা যায়— পশ্চিমভাগে ল্যাটেরাইট মাটি এবং পূর্বভাগে লাল মাটি।
  2. ল্যাটেরাইট মাটি দেখতে অনেকটা ইটভাঙা সুরকির মতো। এতে লোহার ভাগ বেশি থাকে। তবে এই মাটি অনুর্বর। সেচের সুবিধা থাকলে এই মাটিতে চাষাবাদ করা যায়।
  3. এই অঞ্চলের পূর্বভাগে আছে ল্যাটেরাইট ক্ষয়িত লাল মাটি। এই মাটির কণাগুলি খুব সূক্ষ্ম হয় । মাটিতে লোহার ভাগ বেশি থাকে বলে এই মৃত্তিকার রং লাল।
  4. এই মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতা কম । তাই জলসেচের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করা হয়।

উৎপন্ন ফসল

এই মাটিতে ধান , গম , ভুট্টা , আলু প্রভৃতি ফসল উৎপন্ন হয় ।

সমভূমি অঞ্চলের মাটি

অবস্থান

জলপাইগুড়ি , কোচবিহার , উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর , মুরশিদাবাদ , নদিয়া , উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনা , হাওড়া , হুগলি , পূর্ব মেদিনীপুর প্রভৃতি জেলায় এই মাটি দেখা যায়।

বৈশিষ্ট্য

  1. এই মাটির গভীরতা খুব বেশি।
  2. মাটি কিছুটা আম্লিক প্রকৃতির।
  3. মাটির মধ্যে বালি ও পলির পরিমাণ বেশি থাকে।
  4. বয়স অনুসারে এই মাটিকে দুইভাগে ভাগ করা হয়— প্রাচীন পলিমাটি ও নবীন পলিমাটি
  5. প্রাচীন পলিমাটির রং লালচে বা হালকা লাল এবং নবীন পলিমাটি প্রধানত ধূসর রঙের।
  6. প্রাচীন পলিমাটির তুলনায় নবীন পলিমাটি বেশি উর্বর হয়।

উৎপন্ন ফসল

ধান , গম , পাট , আখ প্রভৃতি পলিমাটিতে উৎপাদিত উল্লেখযোগ্য ফসল।

উপকূলের লবণাক্ত মাটি

অবস্থান

সুন্দরবন ও কাঁথি উপকূলে প্রধানত এই মাটি লক্ষ করা যায় ।

বৈশিষ্ট্য

  1. এই মাটির গভীরতা খুব বেশি।
  2. মাটির কণাগুলি খুব সূক্ষ্ম হয়।
  3. মাটিতে লবণের পরিমাণ খুব বেশি থাকে।
  4. এই মাটিতে জোয়ারভাটার প্রভাব বেশি বলে মাটি আর্দ্র ও লবণাক্ত প্রকৃতির হয়।
  5. মাটির রং কালচে প্রকৃতির।

উৎপন্ন ফসল

বৃষ্টির জলের মাধ্যমে বিশেষ পদ্ধতিতে মাটির লবণতা হ্রাস করে নারকেল , সুপারি , ধান , তরমুজ , লঙ্কা , শাকসবজি প্রভৃতি উৎপাদন করা হয়।

Read More

Leave a reply