Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

জাতিপুঞ্জের ব্যর্থতাগুলি সংক্ষেপে উল্লেখ করাে।

জাতিপুঞ্জের ব্যর্থতাগুলি সংক্ষেপে উল্লেখ করাে।

বিশ্বে শান্তিপ্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা রক্ষার লক্ষ্যে বৃহৎ শক্তিবর্গ অনেক আশা নিয়ে জাতিপুঞ্জের প্রতিষ্ঠা করেছিল। জাতিপুঞ্জের মতাে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যেভাবে বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধ ও সমস্যাগুলির সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে তাতে জাতিপুঞ্জের অসারতাই প্রমাণিত হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিপুঞ্জের ব্যর্থতা এত প্রকট হয়ে ধরা পড়েছে যে এইরকম একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়ােজনীয়তা কী সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

জাতিপুঞ্জের ব্যর্থতা

যুদ্ধাবসানে

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের মূল লক্ষ্য ছিল বিশ্বকে যুদ্ধ মুক্ত করা, কিন্তু এক্ষেত্রে জাতিপুঞ্জ অনেকাংশে ব্যর্থ। বিশ্বের বহু জায়গায় বিশেষত সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিতে উদ্ভূত বিভিন্ন সকটের সমাধানে জাতিপুঞ্জ কার্যত ব্যর্থই বলা চলে। আসলে যে সকল যুদ্ধের সঙ্গে বিশ্বের দুই অতি বৃহৎ শক্তি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও সােভিয়েত রাশিয়া প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিল সেই সব ক্ষেত্রে যুদ্ধ সমস্যার সমাধানে জাতিপুঞ্জ ব্যর্থ হয়েছে।

নিরস্ত্রীকরণে

বিশ্বে নিরস্ত্রীকরণ সমস্যার সমাধানে জাতিপুঞ্জ সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ। জাতিপুঞ্জে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণের যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। বিশ্বের বৃহৎ শক্তিবর্গ তা অমান্য করেছিল। গােপনে আমেরিকা, সােভিয়েত রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন,চিন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যায়। এক্ষেত্রে জাতিপুঞ্জের অসহায়তা ব্যর্থতারই নামান্তর।

রণবিদ্বেষ রােধে

জাতিপুঞ্জে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই চালানাের অঙ্গীকার করা হলেও দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃয়াঙ্গাদের ওপর শ্বেতাঙ্গদের অত্যাচার এবং রােডেশিয়ায় বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে জাতিপুঞ্জ কোনাে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

সন্ত্রাসবাদ রােধে

বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা রক্ষার বড়াই করলেও জাতিপুঞ্জ সন্ত্রাসবাদের মূলােৎপাটনে ব্যর্থ। আল-কায়দা, লস্কর-ই-তৈবা, এল.টি.টি.ই-সহ বিভিন্ন উগ্রপন্থী ও সন্ত্রাসবাদী গােষ্ঠী যে নাশকতামূলক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে তার অবসান ঘটাতে জাতিপুঞ্জ ব্যর্থ।

বৃহৎ শক্তিবর্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে তালিবান সরকারের উৎখাতের জন্য যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে তার বিরুদ্ধে বা ভিয়েতনামের যুদ্ধে মার্কিন হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে জাতিপুঞ্জ নীরব থেকেছে। ইরাকের বিরুদ্ধে ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনীর আক্রমণ বা সাদ্দাম হােসেনের সরকারকে উৎখাত করে সাদ্দামের ফাঁসি দিলে এবং ইরাকে মার্কিনরা নিজের তাবেদার সরকার বসালেও জাতিপুঞ্জ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা ছাড়া আর কিছুই করেনি।

উপসংহার

জাতিপুঞ্জের নিজস্ব অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে। জাতিপুঞ্জকে দেওয়া আর্থিক অনুদানের বেশিরভাগটাই যেহেতু আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে, তাই জাতিপুঞ্জ বেশ কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন চাপের জন্য স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ নিতে অপারগ। জাতিপুঞ্জের বিভিন্ন দপ্তরকে দায়িত্ববান করে তােলার ক্ষেত্রেও সুচিন্তিত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই জাতিপুঞ্জের বিভিন্ন দপ্তরের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়ে গেছে, যার ফলস্বরূপ বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে জাতিপুঞ্জ ব্যর্থ হয়েছে। জাতিপুঞ্জের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে ইউনাইটেড নেশন্স-এর রিপাের্টে উল্লেখ করা হয়, জাতিপুঞ্জের ব্যর্থতার অর্থ মানবজাতির ব্যর্থতা।

Read More

Leave a reply