Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

গুপ্তযুগে নারীর স্থান ও মর্যাদা পর্যালােচনা করাে।

গুপ্তযুগে নারীর স্থান ও মর্যাদা পর্যালােচনা করাে।

প্রাচীন ভারতে বিশেষত গুপ্তযুগেও সমাজ ছিল পিতৃতান্ত্রিক, তথাপি গুপ্ত যুগে কন্যা, মাতা ও জায়া রূপে নারীর অস্তিত্ব বজায় ছিল। বাৎসায়নের কামসূত্র, বরাহমিহিরের ‘বৃহৎসংহিতা’ কালিদাসের কাব্য ও নাটক থেকে গুপ্তযুগের সমাজে নারীর অবস্থান ও মর্যাদা সম্পর্কে জানা যায়।

গুপ্তযুগে নারীর স্থান ও মর্যাদা

গুপ্তযুগে নারীর বিভিন্ন অধিকার ও কর্তব্য পূর্বাপেক্ষা অনেক পরিমাণে হ্রাস ও খর্বিত হয়েছিল, যেমন –

1. জন্ম ও বিবাহ

গুপ্তযুগে কন্যা সন্তান অপেক্ষা পুত্র সন্তানই অধিক কাম্য ছিল। অল্প বয়সেই নারীকে সবর্ণ বিবাহ দেওয়া হতাে। অসবর্ণ বিবাহের মধ্যে অনুলােম বিবাহ শাস্ত্রের অনুমােদন পেলেও প্রতিলােম বিবাহ অনুমােদিত ছিল না।

2. গােত্র পরিবর্তন 

গুপ্তযুগেও বিবাহের পর নারীর গােত্র পরিবর্তিত হতাে এবং শ্বশুরবাড়ির গােত্রই তার গােত্র বলে পরিচিত হতাে।

3. শিক্ষালাভ 

গুপ্তযুগে লিখিত স্মৃতিশাস্ত্রগুলির মধ্যে সমাজের রক্ষণশীল রূপ প্রকাশ পায়। এই যুগে মেয়েদের অধিকার ও মর্যাদা যেন আগের চাইতে খর্ব হয়ে যেতে আরম্ভ করে। অবশ্য তখনাে শিক্ষালাভ ও বিভিন্ন কার্যে পুরুষের সহযােগিতা করার রীতি প্রচলিত ছিল। রাজপরিবার ও সম্রান্ত বংশের পাশাপাশি সাধারণ পরিবারের কিছু নারী প্রাচীন ইতিহাস ও পুরাণ পড়তে পারত। পুরুষেরা বহুবিবাহ করতে পারত, কিন্তু উচ্চবর্ণের নারীদের পক্ষে তা নিষিদ্ধ ছিল।

4. পতি ও পতিগৃহের প্রতি দায়-দায়িত্ব 

‘বাৎসায়নের কামসূত্র থেকে জানা যায় যে একজন আদর্শ স্ত্রীর ওপর সংসারের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব ছিল। পতিকে দেবতারূপে শ্রদ্ধা করে পতির সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতি যত্নবান হওয়াই ছিল একজন আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্য। পতি ব্যতীত পরিবারের অন্যান্যদের বিশেষত শশুর, শাশুড়ির প্রতি সেবাপরায়ণতা, গৃহপরিচর্যা, সংসার খরচ সীমিত রাখাও ছিল নারীর অন্যতম কর্তব্য।

5. সতীদাহ প্রথা 

গুপ্ত যুগের সমসাময়িক স্মৃতিশাস্ত্রগুলি থেকে দেখা যায় যে গুপ্তযুগেও সতীদাস প্রথার অস্তিত্ব ছিল। তবে গুপ্তযুগে সতীদাহ প্রথার প্রচলন ছিল সীমিত। কারণ, বৈধব্য জীবনের জন্য কঠোর অনুশাসন জারির ঘটনা বিধবাদের বিপন্ন অস্তিত্বকেই প্রমাণ করে।

6. স্ত্রীধন 

গুপ্তযুগে নারীর বেশ কিছু ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল যা সাধারণত স্ত্রীধন’ নামে পরিচিত। নারীর দামি অলংকার ও পােশাক ছিল এর অন্তর্ভুক্ত। এই ধরনের সম্পত্তি পুরুষ নয় নারীর হাতেই হস্তান্তরিত হতাে।

উপসংহার 

আধুনিক ঐতিহাসিক ও গবেষকদের (বিশেষত সুকুমারী ভট্টাচার্য) মতে, চতুর্থ শতক বা তার পূর্বে বৈদিক যুগে সামজে নারীর উচ্চস্থান সম্পর্কে যা ভাবা হয় তা সর্বাংশে সত্য নয়। ঐতিহাসিক উপেন্দ্রনাথ ঘােষাল দেখিয়েছেন যে গুপ্তযুগের অনেক পূর্বেইব্রাম্মণদের দ্বারা তৈরি আইনের সাহায্যে নারীর বেদ পঠনপাঠন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বলা যায় প্রাচীন ভারতে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীরা বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের সম্মুখীন হয়েছিল। তেমনি বিভিন্ন অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল।

Download PDF

Please wait..
If the download didn’t start automatically, click here.

Leave a reply