Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

রাজনীতি সম্পর্কে নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গিটি ব্যাখ্যা করো।

রাজনীতি সম্পর্কে নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি

নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে বিংশ শতাব্দীতে। পন্ডিতদের মতে ১৯৬০ এর দশকের আগে পর্যন্ত নারীবাদ সম্পর্কিত আলোচনা তেমন গুরুত্ব পায় নি। সেদিকে থেকে দেখতে গেলে বলা যায়, রাজনীতি সম্পর্কে নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির উদ্ভব হয় সাম্প্রতিককালে। অবশ্য অনেকে মনে করেন, বহুকাল আগে ১৭৯২ সালে মেরী উলস্টোনক্র্যাফট এর “Vindication of the Rights of Women’ শীর্ষক গ্রন্থটির মধ্যে সর্ব প্রথম নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির সন্ধান পাওয়া যায়।

নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি একমাত্রিক নয় . নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রধান তিনটি ধারা হল—১) উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ২) সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং ৩) র‍্যাডিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গি। এছাড়া রয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদ, উত্তর আধুনিক নারীবাদ।

ক) নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির মূল বক্তব্য হল, গ্রিক পন্ডিত প্লেটো অ্যারিস্টটলের আমল থেকে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সময়কাল পর্যন্ত রাষ্ট্রচিন্তার যে মূলধন তা হল পুরুষতান্ত্রিক বা পিতৃতান্ত্রিক । এই মূলধারার রাজনৈতিক আলোচনায় সমস্ত বিষয়ে পুরুষের অভিজ্ঞতাকে সর্বজনীন ধরে নিয়ে তাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বস্তুত রাজনৈতিক চিন্তার জগতে নারীর অবদানকে এবং তার ইতিবাচক ভূমিকাকে সবসময়েই অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এখানে নারীকে পুরুষের অধস্তন হিসাবেই দেখা হয়েছে। তা ছাড়া নারী -পুরুষের অবস্থানগত বৈষম্যকেও মূলধারার আলোচনায় কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

খ) রাজনীতি সম্পর্কে নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির উদারনৈতিক আলোচনার সূত্রপাত ফরাসী বিপ্লবের গোড়ার দিকে মেরী উলস্টোনক্র্যাফ্ট এর রচনার মধ্যে দেখা যায়। উদারনৈতিক নারীবাদের ভিত্তি ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদী ধ্যান ধারণার মধ্যে নিহিত আছে। উদারনীতিবাদীরা মনে করেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষ সমান গুরুত্ব সম্পন্ন । এই কারণে সবার জন্য সমান মর্যাদা দেওয়া উচিত। উদারনীতিবাদের মতে, রাজনীতিক জীবনে পুরুষের সঙ্গে নারীরও সমানাধিকার থাকা প্রয়োজন ।

গ) সমাজতান্ত্রিক নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি মূলত কার্ল মার্কসের বৈপ্লবিক ধ্যানধারণার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এঙ্গেলসের ‘The origin of the Family, Private Property and the State’ শীর্ষক গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সন্ধান পাওয়া যায়। সমাজতান্ত্রিক নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি মনে করে, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও শ্রেণিবিভক্ত সমাজে নারী পুরুষের মধ্যে বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে। বস্তুত পুঁজিবাদী আর্থ সামাজিক কাঠামো এর জন্য দায়ী। এই কাঠামোর বদল ঘটিয়ে বিপ্লবের মাধ্যমে পুঁজিবাদের অবসান না হলে নারীজাতির সম্যক মুক্তি সম্ভব নয়।

বিংশ শতাব্দীর ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে গড়ে ওঠা র‍্যাডিকাল নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রবক্তা সাইমন ডি বিয়ভয়ার এর মতে, পিতৃতান্ত্রিক প্রাধান্যকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা প্রয়োজন। র‍্যাডিকাল নারীবাদ মনে করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র রাজনীতি অর্থনীতির মধ্যে সীমিত নেই তা পরিবারের মধ্যেও ছড়িয়ে রয়েছে। র‍্যাডিকাল দৃষ্টিভঙ্গির মতে লিঙ্গগত পীড়ন হল সমাজের সর্বাধিক মৌলিক বৈশিষ্ট্য, রাজনৈতিক দিক থেকে এই সংঘাত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, একে বাদ দিয়ে রাজনীতি সম্পর্কে আলোচনা করলে তা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

Leave a reply